ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় সামাজিক বনায়নের ফরম বিলিতে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ টাকা!

oniyom durnitiপেকুয়া প্রতিনিধি ::

পেকুয়ায় সামাজিক বনায়নের উপকারভোগি নির্ধারনে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অংশীদারিত্ব বাগানের উপকারভোগিদের মাঝে চলছে ফরম বিলি। আর এতে বনবিট কর্মকর্তার নেতৃত্বে চলছে মাসোহারা আদায়ের মহোৎসব। এদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিন বনবিভাগের আওতায় পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া বনবিট কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বনায়নের উপকারভোগি নির্ধারনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

 জানাগেছে চলতি ২০১৫-১৬অর্থ বছরে বারবাকিয়া বনবিট কর্মকর্তার কার্যালয়ের অধিনে প্রায় ১৫০একর পাহাড়ি ভুমি বন্টনের জন্য উপকারভোগিদের মাঝে বনবিভাগ থেকে নির্দেশনা এসেছে। এরই ভিত্তিতে ওই বিটের অধিনে বারবাকিয়া ও সোনাইছড়ি পৃথক মৌজায় উল্লেখিত ভুমি বনায়নের জন্য সরকার উপকারভোগিদের মাঝে বরাদ্ধ দেয়ার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সোনাইছড়ি মৌজার আওতায় ১২৫একর ও বারবাকিয়া মৌজার অধিনে ২৫একরসহ ১৫০একর বনভুমি সামাজিক বাগান সৃজনের জন্য চলতি বছরে বিতরনের উদ্যেগ নেয়া হয়েছে। প্রত্যেক উপকারভোগির অনুকুলে ১একর করে সর্বমোট ১৫০জনকে ওই প্রকল্পের আওতায় মনোনীত করা হবে।

 জানাগেছে চলতি ২০১৫-১৬অর্থ বছরে ভুমি বিতরনের লক্ষ্যে বনবিভাগের বারবাকিয়া রেঞ্জের অধিনে বারবাকিয়া বনবিট কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে স্থানীয়দের মাঝে ফরম বিলি করা হয়েছে। জানাগেছে সামাজিক বাগানের উপকারভোগি নির্ধারনের জন্য সংশ্লিষ্ট বনবিভাগ থেকে সুনিদিষ্ট নীতিমালা দেয়া হয়েছে। এখানে উল্লেখ করা হয়েছে অংশীদারিত্ব বনায়নে এক কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসরত স্থানীয়দের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভুমি বরাদ্ধ দেয়ার নির্দেশনা আছে। অভিযোগ উঠেছে বারবাকিয়া বনবিট কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম ওই নীতিমালা অনুসরন না করে স্থানীয়দের বঞ্চিত করে ওই স্থলে দুরবর্তী এলাকার লোকজনকে সামাজিক বাগানের অংশীদার করা হচ্ছে।

 জানাগেছে ওই বিটকর্মকর্তা উপকারভোগিদের কাছ থেকে প্রতি ফরমে একর প্রতি ৫-৭হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সোনাইছড়ি মৌজার এলাকার লোকদেরকে উপকারভোগি নির্ধারন না করে চুড়ান্ত তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে বহিরাগতদের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে চলতি বছরে বারবাকিয়া বনবিটের ১৫০একর সামাজিক বনায়নের উপকারভোগি প্রক্রিয়া চুড়ন্ত করনের জন্য গত তিনমাস আগে স্থানীয়দের মাঝে বনবিভাগ থেকে ফরম সরবরাহ দেয়া হয়েছে। ওই সময় সোনাইছড়ি মৌজার আওতায় ১২৫একর ভুমির অংশীদারিত্ব’র জন্য প্রায় তিনশত জন স্থানীয়রা ফরম সংগ্রহ করেছেন।

 আবেদনকারীদের মধ্যে সোনাইছড়ি মৌজার বাসিন্দা মনছুর আলম, আহমদ ছবি, আমির হোসেন, আব্দু শুক্কর, ছৈয়দ আলম, বেলাল উদ্দিন, জহির উদ্দিন, জালাল আহমদ জানিয়েছেন অগ্রধিকার ভিত্তিতে সোনাইছড়ি মৌজার ভুমির অধিকার আমাদের। কিন্তু বিট কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম সোনাইছড়ি মৌজার লোকদের বাদ দিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকদের মনোনীত করার চক্রান্ত করছে। মগনামা, উজানটিয়া, রাজাখালী, পেকুয়া ও কুতুবদিয়া উপজেলার লোকদের কাছ থেকে মোটা টাকা নিয়ে তাদেরকে ভুমি বন্টন দেয়ার কাজ করছে। ওই বিট কর্মকর্তা পাহাড়িয়াখালী এলাকার মৃত.সিরাজের ছেলে হেডম্যান জালাল আহমদকে দিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫-৭হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকেও ৫হাজার টাকা করে নিয়েছে।

 বারবাকিয়া বনবিটের হেডম্যান জালাল আহমদ টাকা আদায়ের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি জানায় মাত্র ৫০-৬০টি ফরম বিলি হয়েছে। কারো কাছ থেকে একটি টাকাও নেয়া হয়নি। বারবাকিয়া বনবিট কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম এসব অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান উচ্চতর একটি কমিটি আছে। সরকারি কাজ কারো পক্ষে একা করা সম্ভব নয়। এগুলো একশ পারসেন্ট মিথ্যা কথা। যারা পাননি তারা এসব মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে।

পাঠকের মতামত: